সেই স্টেফানিই বাঁশি বাজাচ্ছেন

ফরাসি নারী রেফারি স্টেফানি ফ্র্যাপার্ট বিশ্বকাপের আগেই ফুটবল দুনিয়ায় নজর কেড়েছিলেন ২০১৯ সালে। সেবার তার বাঁশিতেই সম্পন্ন হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী লিভারপুল ও ইউরোপা কাপের সেরা চেলসির মধ্যকার সুপার কাপটির।

তারও প্রায় এক বছর আগ ধরে ইউরোপিয় ফুটবলে রেফারিং করছিলেন এই নারী রেফারি। সুপার কাপটির আগের মাসে নারী বিশ্বকাপের ফাইনালেও বাঁশি বাজিয়েছিলেন স্টেফানি।

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত ইউরোপিয় ফুটবলের চিত্তাকর্ষক এই ফাইনালটি ছিল প্রায় পুরোটাই নারী রেফারিংয়ে সম্পন্ন হওয়া। কেননা স্টেফানির বিশ্বকাপ সহযোগী ইতালির ম্যানুয়েলা নিকোলোসি ও আয়ারল্যান্ডের মিশেল ও’নিল ছিলেন মাঠের ধারের দায়িত্বে থেকে তাকে সহযোগিতা করার জন্য। তুরস্কের পুরুষ রেফারি চুনেইত চাকির ছিলেন কেবল চতুর্থ ব্যক্তি হিসেবে।

স্টেফানি খেলাটির প্রাক্কালে বলেছিলেন, ‘আমাদেরকে শারীরিকভাবে, টেকনিক্যালি ও ট্যাকটিক্যালি কেবল প্রমাণ করা লাগে যে আমরাও পুরুষদের মতোই। এ নিয়ে আমি ভীত নই। আমার জন্য কিছুই বদলায়নি।’

নারী রেফারি দিয়ে পুরুষদের খেলা চালানোর এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন লিভারপুল ও চেলসি কোচ। চেলসির ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড এটাকে অভিহিত করেন, ‘একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত যা সঠিক দিকে আরো এক ধাপ অগ্রগতি।’

লিভারপুলের য়ুর্গেন ক্লপ বলেছিলেন, ‘অবশেষে, আমি মনে করি সময় এসেছে। নারী রেফারিদের সাথে আমার অনেক অভিজ্ঞতা আছে জার্মানিতে। বিবি স্টেইনহস এটা করছেন। এরপরও তাকে বিবেচনায় নিতে অনেক সময় লেগেছিল। ফুটবল পেশাদারদের তরফে নয়, বরং রেফারিদের তরফে প্রস্তুত হতে সময় লেগেছিল। ইত্যবসরে সে তো স্থিত হয়ে গেছে।’

বিবিয়ানার মতো স্টেফানিরও সুযোগ পেতে অনেক সময় লেগেছিল। প্রায় এক দশকের মতো নিচের লিগগুলোয় কাজ করার পর ২০১৭ সালে এসে সুযোগ পান বিবিয়ানা। স্টেফানিকেও অনেকদিন ফ্রান্সের নিচের লিগগুলোয় বাঁশি বাজিয়ে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছিল। এমনকি খেলোয়াড় ও কোচরা তাকে ফ্রান্সের লিগ টুতে অন্যতম সেরা রেফারি বলার পরও। এরপর অবশ্য তিনি ফ্রান্সের লিগ ওয়ানেও নিয়মিত বাঁশি বাজিয়েছেন।

অবশেষে, এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। বিশ্বকাপে আজ রাতে জার্মানি ও কোস্টারিকার ম্যাচে বাঁশি মুখে স্টেফানি তথা নারী রেফারিদের শিখরে ওঠার নতুন ইতিহাস। তাতে ফরাসি এই রেফারির সাথে লাইন্সম্যানের দায়িত্ব নিয়েছেন আরো দুই নারী ব্রাজিলের ক্যারেন দিয়াজ ও মেক্সিকোর নেওজা ব্যাক। এমনকি ভিডিও রেফারির দায়িত্বেও আছেন আরেক নারী রেফারি, আমেরিকার ক্যাথরিন নেসবিট।