ঢাকা: আগামী শনিবার এশিয়ান কাপ ফুটবলের ফাইনালে কাতার ও জর্ডান মুখোমুখি হবে। স্বাগতিক কাতার এই প্রতিযোগিতার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। অপরদিকে জর্ডান প্রথমবারের মতো এশিয়ার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে যোগ দিয়েছে।
কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে খেলাটি। এ মাঠেই ২০২২ সালে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল। সেবারের বিশ্বকাপে কাতার প্রত্যাশার চাপ নিতে পারেনি। কেননা নিজেদের মাঠে বিশ্বকাপ আয়োজনের পরও দেশটি প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিয়েছিল।
দুই দলের এ অর্জনের মানে হলো এশিয়ার দীর্ঘ ঐতিহ্যের দলগুলোর কোনটিই এবারের ফাইনালে নেই।
২০২২ বিশ্বকাপেরও স্বাগতিক কাতার সেমিফাইনালে ইরানকে ৩-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে যোগ দেয়। অপরদিকে জর্ডান ২-০ গোলে দক্ষিণ কোরিয়াকে হারিয়ে এই ঐতিহাসিক অগ্রগতি সম্ভব করে তোলে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে জায়গা করে নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ কাতারকে ফাইনালে তুলে আনে আলমোয়েজ আলির ৮২ মিনিটে দেয়া গোলটি। ইরান চতুর্থ মিনিটে সর্দার আজমৌনের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কাতারের জাসেম গাবের তা শোধ করে দেন। এরপর বিরতির আগেই আবার আঘাত হানেন আকরাম আফিফ।
ইরান এরপরও ৫৩ মিনিটে সংশয় জাগানো সিদ্ধান্তে পাওয়া পেনাল্টিতে আলি রেজা জাহানবক্সের গোলে খেলায় ফিরেছিল। ২০১৯ সালের টুর্নামেন্টে নয় গোল করলেও এবারের আসরে এটি ছিল কেবল তার দ্বিতীয় গোল। ভিডিও এসিসটেন্ট রেফারিই পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।
কিন্তু আলমোয়েজের গোল এবং যোগ হওয়া সময়ে (১৩ মিনিট) খালিলজাদেহর লাল কার্ড পেয়ে মাঠছাড়া হলে আর কিছুই করার থাকেনি ১৯৭৬ সালের পর আবার ফাইনালের স্বপ্ন দেখা ইরানের। শনিবারের ফাইনালে জয়ী হলে জাপানের পর কাতারই হবে টানা দুইবার এশিয়ান কাপ জয়ী দেশ। জাপান ২০০০ ও ২০০৪ সালে এই সাফল্য দেখিয়েছিল।
গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে আফিফ: এদিকে সেমিফাইনালের গোলটির সুবাদে কাতারের আফিফ গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে ইরাকের আয়মেন হুসেইনের সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে এনেছেন। কারণ আফিফের এটি হলো চলতি এশিয়ান কাপে পঞ্চম গোল। আয়মেন তার চাইতে এক গোলে এগিয়ে আছেন।
ঐতিহাসিক জয় জর্ডানের: এদিকে প্রতিযোগিতার প্রথম সেমিফাইনালে জর্ডানের জয়ে অবদান রাখে ৬৬ মিনিটে করা মুসা তামারির গোলটি। এর আগে ইয়াজান আল নেইমাত ৫৩ মিনিটে দলটিকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। দুজনের এ নৈপুণ্যে বিদায় নিতে হয় দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ও এশিয়ার অন্যতম সেরা দল দক্ষিণ কোরিয়াকে। জর্ডান এ বছরের আগে কখনোই কোয়ার্টার ফাইনালের উপরে যেতে পারেনি।
দক্ষিণ কোরিয়া অবশ্য মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত খেলাটিতে কিছুটা দুর্ভাগ্যের শিকারও হয়েছিল। কেননা তাদের টটেনহ্যাম হটস্পারের তারকা সন হিউং মিন এর একটি গোলের চেষ্টা চালালেও তা অফসাইডের কবলে পড়ে। পরে ২৯ মিনিটে একটি পেনাল্টি পেলেও তা ভিডিও এসিসটেন্ট রেফারি তা বাতিল করে দেন।
এভাবেই কপাল পোড়ে কোরিয় দলটির জার্মান কোচ যুর্গেন ক্লিন্সম্যানেরও। এক বছর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার ফুটবল কোচের দায়িত্ব নিলেও দেশটির কিছু সমর্থক অবশ্য তার ওপর সন্তুষ্ট নয়। সেটা স্বাভাবিকও। কেননা দক্ষিণ কোরিয়া শেষবার এশিয়ান কাপ জিতেছিল ১৯৬০ সালে।